পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৩

অভিনব শাস্তি (সত্য ঘটনা)

ঠিক মনে নেই, কবে এই ভয়াবহ পরীক্ষাটি হয়েছিল আর কোথায়ই বা হয়েছিল। তবে সেটা যেখানেই হোক না কেন সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে তা অত্যন্ত এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে আসে। মানবমনের সাথে তার শরীরের সম্পর্ক যে কতখানি গভীর তা বুঝতে সাহায্য করে। প্রথম শোনার পর যদিও আমার এটা অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়েছিল। তবুও আমার তখন ক্লাস সেভেন। তাই ইস্কুলে সুদর্শন স্যর যখন গল্পটা বললেন তখন বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে মেনে নিয়েছিলাম পুরো ঘটনাটাই। আর কিভাবেই বা অবিশ্বাস করব? সুদর্শন স্যার পি.এইচ.ডি গোল্ড মেডেলিস্ট। আর তাছাড়া স্যর আমাদের অমনভাবে মিথ্যে গল্প বানিয়ে বলবেনই বা কেন? না মিথ্যে তিনি বানান নি। সে কথা আজ বুঝি মনস্তত্ত্ববিদদের সাথে কথা বলে। যাই হোক, এবার আপনাদের নিশ্চয়ই শুনতে ইচ্ছে করছে যে পরীক্ষাটা আসলে কি ছিল তাই তো? আসুন -

কোন এক আদালতে এক ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তার শাস্তি হয়েছিল মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আগে একদল পরীক্ষক এলেন তাঁদের আর্জি নিয়ে। তাঁরা বিচারপতির সাথে নিভৃতে কিছু কথা বলতে চাইলেন। কিন্তু তাঁদের এই আর্জিটা যে কি ছিল সেটা তখনও কেউ জানত না। সাজা দেওয়ার দিন অপরাধীকে বলা হল, তোমার শাস্তি কোন সাধারণ উপায়ে হবে না। তোমার চোখ বেঁধে যেখানে নিয়ে যাব তুমি সেখানেই যাবে আর যা যা বলব তাই করবে। এই বলে অপরাধীর চোখ একটা কালো কাপড়ে শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হল। এরপর তাকে একটি বিশেষ ঘরে নিয়ে যাওয়া হল। ঘরে ঢোকানোর আগে তাকে এটা বলা হল যে এটা কিছু ভয়ানক বিষাক্ত সাপেদের আস্তানা আর এই সাপের কামড়েই তার মৃত্যু হবে। এটাই তার সাজা। এখানে উল্লেখ্য যে অপরাধী কিন্তু পরীক্ষার ব্যাপারে একচুলও অবহিত ছিল না। যেহেতু তার চোখ বাঁধা সেহেতু সে ঘরের সম্বন্ধে কোন ধারণাও করতে পারছিল না। কিন্তু সে সব কিছু শুনতে পাচ্ছিল। ঘরের দরজা বন্ধ হয়ে গেল সশব্দে। হঠাৎ সে শুনতে পেল সাপের হিসহিস শব্দ। সে বুঝতে পারল সাপগুলো তার কাছেই আছে। আর সেখানে একটা নয় প্রচুর সাপ। সে এবার ভয়ে চীৎকার করে উঠল। কিন্তু কেউ সাড়া দিল না তার ডাকে। সে স্পষ্ট বুঝল তার পায়ের পাতার ওপর দিয়ে একটা সাপ চলে গেল। আরেকটা সাপ তার গায়ের ওপর দিয়ে উঠতে লাগল। সে ওটাকে হাত দিয়ে ধাক্কা মেরে সরাতে যাবে, কিন্তু তার আগেই সেটা তার হাতে মারল এক ছোবল। পিন ফোটার মত ব্যথা হল তার হাতে। সে বুঝতে পারল, হাত থেকে রক্ত তার পায়ের পাতায় পড়ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই অপরাধী মারা যায়। আর এটাই ছিল পরীক্ষাটা।
এবার নিশ্চয়ই আপনারা আমায় বলবেন, এ আবার কি হল? সাপের কামড়ে অপরাধীর মৃত্যু হল এতে আর আশ্চর্য্য কি? কি যে সব ছাইপাঁশ লেখেন কোন মানে নেই। তাহলে আমি বলব সবুরে মেওয়া ফলে। হ্যাঁ, আসলে এটাই পরীক্ষা। ওটা কোন সাপের ঘর ছিল না, বরং ছিল একটা পরীক্ষাঘর। আর সেই ঘরে অনেকগুলো কেন একটাও সাপ ছিল না। যেগুলো ছিল সেগুলো হচ্ছে, একটা রেকর্ড প্লেয়ার যেটা থেকে ঐ হিসহিস শব্দ বেরোচ্ছিল। আর সেটা এত উন্নত মানের প্লেয়ার যে সেই শব্দকে যে কারুর সত্যি বলে ভ্রম হবে। আর অপরাধীর গায়ের ওপর দিয়ে বিশেষভাবে তৈরী দুটো দড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যেগুলোকে সে সাপ বলে মনে করেছিল। আর যখনই সে হাত দিয়ে দড়িটাকে সরাতে যায় তখনই তার হাতে দুটো পিন ফোটানো হয়। আর তার সাথে সাথে তার পায়ের ওপর জলের ফোঁটা ফেলা হতে থাকে। শুধু নিজের বিশ্বাসে সে নিজেই নিজেকে এইভাবে হত্যা করে। বলুন তো, ঘটনাটা সত্যিই ভয়াবহ কিনা? 

৫টি মন্তব্য:

Hassan bhalo chele বলেছেন...

Bhalo laglo

Hassan bhalo chele বলেছেন...

samay

Sourajit বলেছেন...

Khub Bhalo Psycholigy.. darun..

NIRANJAN বলেছেন...

সত্যিই কি মারা যায়!

ঐশিকা বসু বলেছেন...

যাঁরা ভেবেছেন এটা সত্য নয়, তাঁদের উদ্দেশ্যে বলি এটা সত্য ঘটনাই। সাইকোলজিটা আমাদের অজানা। মনে রাখবেন - There are more things in heaven and earth, Horatio,
Than are dreamt of in your philosophy.