মাংস কাটছিল লোকটা। চপারে টুকরো টুকরো হচ্ছিল মুরগি, আওয়াজ উঠছিল খচ-খচ-খচ। ক্রেতা দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে, বিষণ্ণ।
একটা নেড়ি কুকুর। হাড়গিলে হতশ্রী দশা। উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে মাংসের দিকে। লোকটা দুবার তাড়ানোর চেষ্টা করল। সে ভয় পেলেও নড়ল না বিশেষ। ক্রেতা চলে গেলে পড়ে রইল উচ্ছিষ্ট মাংসের টুকরো, নাড়ীভুঁড়ি ইত্যাদি।
লোকটার দয়া হল। আশেপাশের লোকজনেরও দয়া হল। সকলে মিলে দিল ভোট। তার ভিত্তিতে লোকটা কিছু নাড়ীভুঁড়ি কুকুরটার দিকে ছুঁড়ে দিল। তারপর …
আরেকটা কুকুর
আরেকটা কুকুর
আরেকটা কুকুর।
মাসখানেকের মধ্যেই চার-চারটে কুকুর এসে জুটল। এখন আর শুধু উচ্ছিষ্টে তাদের চলে না। প্রতিদিন গরম ধোঁয়া ওঠা মাংসও তাদের চাই। ফলে দিনে দিনে তাদের আয়তন, শক্তি, ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে লাগল। লোকটা ভাবল বেশ তো, পাহারাদার!
২
সেদিন দোকানে কোন ক্রেতা আসেনি। মনমেজাজ খারাপ। কুকুরগুলো দাঁড়িয়ে রয়েছে সামনে, অভুক্ত। শেষমেশ রাত দশটায় লোকটা যখন দোকানঘর বন্ধ করতে যাচ্ছে, সেসময় একটা কুকুর হিংস্র দাঁত বের করে ঝাঁপিয়ে পড়ল লোকটার ওপর। তারপর …
আরেকটা কুকুর
আরেকটা কুকুর
আরেকটা কুকুর।
হিংস্র আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলো লোকটার দেহ। কুকুরগুলো তাকে আত্মসাৎ করে একটা বিরাট হুঙ্কার ছাড়লো। আশেপাশে রাস্তার লোকজন সন্ত্রস্ত হয়ে দৌড়ে যে যার বাড়ি পালাতে লাগল। মূহুর্তে শুনশান হয়ে গেল শহরের গোটা রাস্তা। সবাই দরজা-জানালায় কুলুপ আঁটল। আর কুকুরগুলো দাপিয়ে বেড়াতে লাগল গোটা শহর।
দিনকতক এভাবে কাটিয়ে শহরের জনগণ একেবারে অতিষ্ঠ। বাড়ির মধ্যে আটকে থেকে কতদিন আর বাঁচা যায়? তাই তারা সবাই মিলে আবার ভোট দিল। কুকুরগুলোর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায়
কিভাবে?
কিভাবে?
কিভাবে?
আলোচনা, আলোচনার শেষে ভোটদান, ভোটদানের শেষে গণনা, গণনার শেষে ঐক্যমতে আসা গেল – এবার একটা বড়সড় বাঘ পুষতে হবে।