সে এক রূপকথার দেশ। দেশের নাম বিলাসপুর। যেমনি তার নাম তেমনি ঐশ্বর্য্য। রাজা, রানী, প্রজারা সবাই সেখানে সুখে, শান্তিতে বাস করে। রাজার এক মেয়ে, নাম তার কুসুমকলি। যেমনি তার রূপ, তেমনি গুণ। সারা দেশে সে যেন তুলনাবিহীন। কুসুমকলির নাম, খ্যাতি তাই ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশ থেকে দেশান্তরে। সেই দেশেরই পাহাড়ের এক অন্ধকার গুহায় বাস করত এক ভয়ানক দুষ্ট দৈত্য। কিঙ্কর তার নাম। তার কাছে থাকত এক যাদু আয়না। সে আয়নার কাছে গিয়ে যা বলতো অমনি আয়নায় তা ফুটে উঠত। এমনি একদিন কিঙ্কর তার আয়নার কাছে গিয়ে বলল, আচ্ছা, বল ত আয়না, এ পৃথিবীতে সবথেকে রূপবতী রমণী কে? সঙ্গে সঙ্গে আয়নায় ফুটে ওঠে কুসুমকলির অপরূপ ছবি। পৈশাচিক হাসি হেসে কিঙ্কর বলে উঠল, যে করে হোক, একে আমি বিয়ে করব। যে কথা সেই কাজ। কিঙ্কর এক সুন্দর ছোট্ট পাখির রূপ ধরে রওনা দিল বিলাসপুরের রাজবাড়ির দিকে। তখন বিকেলবেলা। প্রাসাদের ছাদে কুসুমকলি ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এমন সময় তার চোখে পড়ল সুন্দর পাখির বেশে থাকা কিঙ্করকে। কিন্তু সে তো আর জানে না যে ওটা একটা ভয়ানক দৈত্য। সুন্দর পাখি দেখে কুসুমকলি এগিয়ে গেল ওর দিকে। যেই না যাওয়া, অমনি দৈত্য তার নিজের ভয়ঙ্কর রূপ ধরে রাজকন্যাকে নিয়ে গেল তার নিজের গুহায়। সমস্ত ঘটনাটা রাজার কানে যেতেই তিনি ভারী মুষড়ে পড়লেন। রাণী নাওয়া-খাওয়া ভুললেন। প্রজারা সবাই হা-হুতাশ করতে লাগলো। রাজকার্য প্রায় বন্ধ হবার যোগাড় হল। রাজার হুকুমে ঢেঁড়া পিটিয়ে জানানো হল, যে রাজকন্যাকে উদ্ধার করে আনতে পারবে তাকে দশলক্ষ স্বর্ণমুদ্রা দেওয়া হবে। কিন্তু কেউই তাঁর এ ডাকে সাড়া দিল না। এরপর রাজা ঘোষণা করলেন, রাজকন্যার উদ্ধারকারীকে স্বর্ণমুদ্রার সাথে অর্ধেক রাজত্বও দেওয়া হবে। তবুও কেউ আসে না। মন্ত্রী জানালেন, দেশে বীরের বড় অভাব। রাজা আরো ভেঙে পড়লেন। রাজকার্য বন্ধ হল। আর এদিকে একাকিনী, বন্দিনী অবস্থায় রাজকন্যা পড়ে রইল এই আশায় যে কোন একদিন কোন এক রাজপুত্র তাকে উদ্ধার করবে। কিন্তু কেউই এল না তবু। আর আসবেই বা কি করে? সব রাজপুত্রেরাই তো এখন পড়া তৈরী করতে ব্যস্ত। না হলে আন্টি যে তাকে বেধড়ক মারবে। তারপর মায়ের পড়া আছে, ক্লাসের পড়া আছে। নাই বা থাকল তার রাজকন্যার গল্প, নাই বা থাকল তার ছেলেমানুষি কল্পনা। তাকে শুধুই পড়া তৈরী করতে হবে। নইলে কেজি টুয়ে সে ফার্স্ট হবে কি করে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন